যাহা বলিব সত্য বলিব

এ কথা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, আমার রুচিবোধ অত্যন্ত মোটাদাগের। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমার আনন্দ উপভোগের উপায় খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি নিম্নস্তরের ক্রিয়াক্রর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আমি ওস্তাদি গানের চেয়ে বিজয় পাগলেই শান্তি পাই বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের চেয়ে রাধারমণই বেশি টানে আমাকে। আমার অানন্দের সবচেয়ে বড় উপায় হলো খাওয়া। একে যদি লোভ বলে কেউ, তাতেও আমার আপত্তি নেই। একখণ্ড উৎকৃষ্ট মানকচু আর দু’টুকরো শোল মাছের জন্য আমি সহস্রবার বাঙলাদেশে জন্মাতে রাজি আছি।

আহা! কোথায় শ্রাবস্তীর কারুকার্য, কোথায় কান্তজীর মন্দির আর কোথায়ই বা মায়া-অ্যাজটেক সভ্যতার স্থাপত্যশৈলী! সফেদ মোলায়েম মানকচুর সাথে সুঠাম শোলমাছের মরণান্ত প্রেমের এইরকম অপরূপ তাজমহলের তুলনা আর কীইবা হতে পারে! একখণ্ড উৎকৃষ্ট চইঝাল যেন শিরাজী সূধার মত সেই প্রেমে ঝাঁজ আর সুগন্ধ ছড়াচ্ছে। হঠাৎ ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হচ্ছে। মনে হচ্ছে ঈশ্বরকে প্রশ্ন করি, “হে পরম করুণাময়, পরমপিতা, পরমবিভুতি, পরম ভাগবৎ; স্বর্গে মানকচু আর শোল মাছ পাওয়া যাবে তো?”